Dhakeshwari Temple। nayemjibon।।

  • 2 years ago
Dhakeshwari Temple
ঢাকেশ্বরী মন্দির ঢাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্দির। সলিমুল্লাহ হল থেকে আনুমানিক ১.৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ঢাকেশ্বরী রোডের উত্তর পার্শ্বে একটি অনুচ্চ আবেষ্টনী প্রাচীরের মধ্যে মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দির অঙ্গনে প্রবেশের জন্য রয়েছে একটি সিংহদ্বার। সিংহদ্বারটি নহবতখানা তোরণ নামে অভিহিত।

জনশ্রুতি অনুযায়ী মন্দিরটির নির্মাতা বল্লাল সেন নামে একজন রাজা। তবে এ বল্লাল সেন প্রকৃত অর্থেই সেন বংশের বিখ্যাত রাজা কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট মতপার্থক্য আছে। কেউ কেউ দাবি করেন যে, এখানে প্রতিষ্ঠিত ঢাকেশ্বরী মূর্তি ও মন্দির মহারাজা বল্লাল সেনের আমলের। কিন্তু স্থাপত্য নির্মাণ কৌশলের বিবেচনায় এটি গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের আগমনের পূর্বে তথা সেন রাজবংশের রাজত্বকালে বাংলার স্থাপত্যশিল্পে মর্টার হিসেবে চুন-বালি মিশ্রণের ব্যবহার ছিল না। কিন্তু ঢাকেশ্বরী মন্দিরটি আগাগোড়াই চুন-বালির গাঁথুনিতে নির্মিত, যা বাংলার মুসলিম আমলেরই স্থাপত্য রীতির বৈশিষ্ট্য
আবার আবুল ফজল তাঁর আইন-ই-'আকবরী র ’দশটি সুবাহর জরিপ’ শীর্ষক অধ্যায়ে প্রতিটি সুবাহর সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ের বিশদ বিবরণ

প্রতিটি সুবাহর সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ের বিশদ বিবরণ দিলেও বাংলা সুবাহর এ বিখ্যাত মন্দির সম্বন্ধে কিছুই উল্লেখ করেন নি। যদি এ মন্দির গ্রন্থটি রচনার আগে বা রচনার সময়েও নির্মিত হয়ে থাকে তাহলে ওই গ্রন্থে । এ মন্দিরের উল্লেখ থাকাটা স্বাভাবিক ছিল অন্যদিকে মন্দিরের তিন গম্বুজবিশিষ্ট ছাদ, খিলান সমন্বিত তিনটি প্রবেশপথ এবং প্লাস্টার করা দেওয়াল একটি জোরালো বিশ্বাসের জন্ম দেয় যে, বাংলার মুগল স্থাপত্য রীতিতেই এ মন্দির নির্মিত। নলিনীকান্ত ভট্টশালী ও মন্দিরের মূর্তিটিকে অত প্রাচীন বলে মনে করেন নি।

অন্যদিকে মন্দিরের রীতি এবং গঠনকাঠামো এর নির্মাতা হিসেবে অন্য একজনকে ইঙ্গিত করে যার চরিত্রে বাংলার প্রচলিত সংস্কৃতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায় না। এখানে আরাকানি বৌদ্ধ মন্দিরের মতো পুকুর, অশ্বত্থবৃক্ষ, বাগান, মঠ, পান্থশালা, সন্ন্যাসীর আশ্রম, মন্ডপ, বারান্দা, গর্ভগৃহ ইত্যাদি রয়েছে। সেই সাথে আরাকানি ধর্মের মতো বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও সার্বজনীনতা প্রকাশ পায় মন্দিরে সকলের উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারে। আবার এখানে দেখা যায় যুগল মূর্তি, একটি দশভুজা দেবী (ঢাকেশ্বরী দেবী নামে পরিচিত) এবং অন্যটি চতুর্ভুজ দেবমূর্তি (বাসুদেব নামে পরিচিত), যা মগদের তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মের প্রতীক। অন্যদিকে মগ নাথদের সাধারণত কোনো বিশিষ্ট নাম নেই। তাদের নামকরণ হয় প্রধানত স্থান, জাতি ইত্যাদি নামের উপান্তে নাথ, ঈশ্বর, ঈশ্বরী প্রভৃতি শব্দ যুক্ত করে। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের দশভুজা দেবীর বিশিষ্ট কোনো নাম নেই। কোথাও তিনি রাজেশ্বরী, কোথাও তিনি দুর্গা, আবার কোথাও তিনি মহামায়া বা চন্ডী। শহরের পৃষ্ঠপোষক ঈশ্বরী হিসেবে এ দশভুজা দেবীর নাম হয়েছে ঢাকেশ্বরী (ঢাকা+ঈশ্বরী)। দেবীর এ নামকরণ থেকেও এটি ইঙ্গিত দেয় যে, এ দেবী একজন মগ দেবী। আবার স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট্যে আরাকানি প্রভাব দেখা যায়। এসব বৈশিষ্ট্য ইঙ্গিত করে যে, মন্দিরটির নির্মাতা আরাকানের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা মলহন ওরফে হোসেন শাহের পুত্র এবং আরাকানরাজ শ্রীসুধর্ম রাজার ছোট ভাই মঙ্গত রায় যিনি বল্লাল সেন নামে ইতিহাসে পরিচিত। আরকান থেকে বিতাড়িত হয়ে বল্লাল সেন ঢাকায় আশ্রয়প্রার্থী হন।

অবশ্য মন্দিরটির নামকরণের আরও একটি ব্যাখ্যা রয়েছে। দেবী মূর্তিটি মাটিতে ঢাকা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, তাই এর নামকরণ এরূপ হয়েছে। কিংবদন্তি রয়েছে যে, সেন রাজা বল্লালসেন মূর্তিটি খুঁজে পান এবং তিনি দেবীর জন্য এ মন্দি