বন্যায় টাঙ্গাইলে রেললাইনের ব্রিজে ধস ,হাজার যাত্রীর প্রাণ কিভাবে রক্ষা হলো দেখুন।...

  • 7 years ago
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পৌলী রেলসেতুর অ্যাপ্রোচের (সংযোগের) ক্ষতিগ্রস্ত অংশের মেরামতকাজ আজ রোববার দুপুরে পরিদর্শন করেছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কাল সোমবার সকালের মধ্যে এ পথে পুনরায় ট্রেন চলাচল চালু করা সম্ভব হবে।

এর আগে আজ ভোরে ওই রেলসেতুর দক্ষিণে সংযোগ পথের মাটি বন্যার পানিতে ধসে যায়। এতে করে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।


টাঙ্গাইল রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. জালালউদ্দিন জানান, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওই এলাকা পার হয়। এরপরই মাটি ধসে যাওয়ার বিষয়টি নজরে আসে। রেলসেতুর দক্ষিণ পাশে প্রায় ২০ ফুট এলাকার মাটি ধসে গেছে বলে তিনি জানান।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক অসিম কুমার তালকুদার জানান, ধসে যাওয়ার পরপরই নীলফামারী থেকে ঢাকাগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেতু এলাকায় আসে। এ সময় স্থানীয় লোকজন লাল কাপড় উড়িয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দেন।

পৌলী গ্রামের মোকছেদ আলী জানান, সকালে নামাজ পড়তে গিয়ে তিনি রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানতে পারেন। পরে এলাকার লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে লাল কাপড় উড়িয়ে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি তাঁরা থামান।

খবর পেয়ে পাকশী থেকে রেলওয়ের পশ্চিম বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহবুব আলম, কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু নাসার আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী রমজান আলী জানান, তাঁরা ক্ষয়ক্ষতির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। ঢাকা ও পাকশী থেকে প্রকৌশলীরা এসে মেরামত কাজ শুরু করেছেন।

রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক আজ দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত পৌলী রেলসেতুর মেরামতকাজ দেখতে আসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, সোমবার সকালের মধ্যেই মেরামতকাজ শেষ করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হবে। এ জন্য রেলের কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আসন্ন ঈদ সামনে রেখে মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে যা কিছু করা দরকার, তার সবই করা হচ্ছে।

এ সময় রেল মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোফাজ্জল হোসেন, অতিরিক্ত সচিব মুজিবুর রহমান, রেল বিভাগের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহবুব আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

টাঙ্গাইলের রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. জালাল উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থলে নীলফামারীর চিলাহাটির থেকে ঢাকাগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকা পড়ে। পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই ট্রেনটি বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশনে চলে যায়। সেখানে ঢাকাগামী রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটিও আটকা পড়ে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম স্টেশনে দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেন এবং ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি জয়দেবপুর রেলস্টেশনে আটকা পড়ে। পরে এই রেলপথের সব ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়। সেতুর মেরামতকাজ চলা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।

Recommended