জঙ্গলমহলের হাতি

  • last year
হায় রে খিদে!! হায় রে ঠাকুর
★★★★★★★★★★★★★★★

ভক্তের জন্য প্রসাদ ফেলে যাও তুমি....

ঠাকুর ততক্ষণই ঠাকুর যতক্ষণ পর্যন্ত না সে সহজলভ্য হয়ে ওঠে।জঙ্গলমহল জুড়ে যা এতকাল পুজিত হয়ে এসেছে ঠাকুর হিসেবে,আজকের দিনে সেই ঠাকুরই ত্রাস।জঙ্গল ছেড়ে উঠে আসছে লোকালয়ে।গৃহহীন হচ্ছে জঙ্গল সীমান্তের বেশকিছু আদিবাসী।তারাও আধুনিক খাদ্যাভ্যাস রপ্ত করছে।জঙ্গলভূমি ক্রমশ সংকীর্ণ থেকে সংকীর্ণতর হচ্ছে ঠাকুরও তার বিচরণ ভূমি পাল্টাতে পাল্টাতে পুরুলিয়া বাঁকুড়া,গোয়ালতোড়, গড়বেতা, শালবনী, লালগড়, ঝাড়গ্রাম, নয়াগ্রাম জুড়ে হয়ে উঠেছে রেসিডেন্ট।কয়েক 'শ' হাতির ঝুণ্ড এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই সব জঙ্গলাকীর্ণ ভূমি।
গতপরশু এরকম একটি ৩৫টি ঠাকুরের ঝুণ্ডের সম্মুখিন হয়ে মনে হল এও এক উৎসব।ভয়ংকর জীবন বাজী ধরে খেলা উদযাপন।একজন নিহত ও গোটা দশ বাড়ি ধুলিস্যাৎ করার পর কয়েক 'শ' বিঘা জমির ধান নষ্ট করে উড়িষ্যার দিকে যাত্রার মোড় নেয়।যদিও যা ঠাকুর না নষ্ট করে তারচেয়ে বেশি অত্যুৎসাহীদের তাড়নে নষ্ট হয়।এও এক গ্রাম বাংলা তথা জঙ্গলকেন্দ্রিক মানুষের কাছে অ্যামিউজমেন্টের অংশ।হুলাপার্টি ও খ্যাদাপার্টি যেখানে যেখানে সামান্য থিতু হচ্ছে পারলে সেখানেও ফুচকা ঝালমুড়ি বা ঘুগনি দোকান বসে যায়।সাথে একটা অস্থায়ী সাইকেল ও বাইকস্ট্যান্ডও।এই হুজুগেই চলছে আমার বাংলা।এখানে ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে হুজুগবাবা বড়।দেখলাম এই ঠাকুরের দর্শনার্থী ৪হাজারেরও বেশি।হয়তো এর কারণ সময়টা।এরকম দিনের আলোয় রাস্তার ধারে জমিতে চাক্ষুষ করার স্বাদ স্যারাউন্ডিং প্রায় ১৫ - ২০ টি গ্রামের বৌ বাচ্চা সহ জমা হয়।
হয়তো এই কারণেই ঠাকুর।কারণ এখানে ভীতি আছে ত্রাস আছে ভক্তি কিম্বা আবার আনন্দও।তারা আছে তাদের অস্তিত্বের লড়াই এ, আর পেছনে গ্রাম বাংলা জঙ্গলমহল হুজুগ হাতে জুতো খুইয়ে কুলকুলির সাথে চলেছে ১ বা ২ কি.মি নয় ২০-৩০ কি.মি। সে এক সমারোহী যজ্ঞ।তাড়ন-পীড়নের এক নৃশংস নৈস্বর্গিক যজ্ঞ।কখনও দুধ ধানের লোভ বা মহুলশুখার আনন্দ আবার কখনও বৈচিত্রময় পনসের গন্ধ ঠাকুরদেরও এই আপীড়নে অভ্যস্ত করে তুলছে ধীরে ধীরে।চলুক..চলুক..

এই তো আমার হুজুগের যুগ

Recommended