তিন প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে প্রতিবন্ধী বাবার বেঁচে থাকার লড়াই | Jagonews24.com
  • 3 years ago
জীবনের গল্পটা যখন শুধুই বেঁচে থাকার লড়াই।
জীবন কখনো রঙ বদলায়।
শত প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেও অনেকে দিব্যি বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেন অবিরত।

সৃষ্টিকর্তা যে কখন কাকে কেমন করে রাখেন সেটাও তো বলা দায়।
এই যেমন জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী না হলেও একটা সময় দুই পায়ের শক্তি হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন লোকমান মিজি।
শুধু কি নিজেই প্রতিবন্ধী? না, শারীরিক প্রতিবন্ধী দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে দুর্বিষহ এক জীবনের ঘানি টেনে চলছেন তিনি।

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার হাসা গ্রামের সিকান্দর মিজি ও তৈয়বেনেচ্ছার তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে লোকমান মিজি।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েই তিনি বেড়ে উঠেছেন।
লোকমান মিজির মাও ছিলেন একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী।
ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, লোকমান মিজির তিন সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েই জীবন পার করছেন।
জন্মের তিন-চার বছর বয়সে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাঁটাচলা করার শক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি। বহু চিকিৎসা করিয়েও তার পা ভালো করা যায়নি।
ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, গল্পগুলো যেন ঠিক একই রকমের। তার তিন সন্তান রাকিব, মুক্তা এবং নিশুর জীবনেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে।
তারাও তাদের বাবার মতোই হাঁটাচলা করার ক্ষমতা হারিয়ে বসে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েই তাদের এখন জীবন সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
চিকিৎসা করিয়েও তাদের ভালো করা সম্ভব হয়নি।
তার বিশ্বাস উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো তার সন্তানরা স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে।

একদিকে নুন আনতে পান্থা ফুরায়, অন্যদিকে তাদের চিকিৎসা খরচ! এ যেন মাথার ওপর পাহাড়সম চাপ!

অন্যদিকে ভাগ্য যে তাদের অনুক‚লে নেই সেটা তো চোখ বন্ধ করেই বলে দেয়া যায়।
এক কক্ষের ছোট্ট এক ঘরে স্ত্রী, তিন সন্তান, ছেলের বউ, নাতি নিয়ে কোনো রকমে রাতযাপন করা।
এ যেন ভাগ্য বিড়ম্বনার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

বর্তমানে লোকমান মিজি ছোট্ট একটি দোকানে দর্জির কাজ করেন। হুইল চেয়ারে ঘোরেন। তার সন্তানদেরও একই হাল। তবে তার গৃহকর্ত্রী যে তাদের আদর-¯েœহ আর মমতা দিয়ে আগলে রাখতে ভুল করেনি, সে কথাও অকপটে স্বীকার করলেন।

সরকার থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা জুটলেও, জুটেনি একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই, একটি ঘর। হয়তো সে কারণেই আক্ষেপের সুরটা তার কণ্ঠে একটু বেশিই। নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করলেও অসৎ উপায় অবলম্বনের কোনো চেষ্?
Recommended