স্ট্যাচু অব লিবার্টি তৈরির ইতিহাস | United states | Statue of Liberty | USA |

  • 4 years ago
স্ট্যাচু অব লিবার্টি তৈরির ইতিহাস | united states | Statue of Liberty | USA |

নিউ ইয়র্ক হার্বারের বুকে ৩০৫ ফিট ৬ ইঞ্চি উঁচু, স্ট্যাচু অব লিবার্টি নামের সেই মূর্তিটি বিশ্বের বুকে যুক্তরাষ্ট্রের অনন্য এক নিদর্শন। নিজেদের কালো অধ্যায়কে পেছনে ফেলে বিশ্বের বুকে আমেরিকার মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর এক বার্তাই যেন দেয় এই ভাস্কর্য।

'স্ট্যাচু অব লিবার্টি' নামে বিশ্ববাসী এই মূর্তিটিকে চিনলেও এর প্রকৃত নাম 'লিবার্টি এনলাইটেনিং দ্য ওয়ার্ল্ড'। বহু লোকের নিরলস পরিশ্রম ও ধৈর্যের ফসল এই ভাস্কর্য আজ মার্কিনীদের জাতীয়তাবোধের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। একদম শূন্য থেকে একটি মূর্তি কীভাবে একটি জাতির আত্মপরিচয়ের অংশ হয়ে উঠলো?

বার্থোল্ডি জানতে পারলেন, খুব দ্রুতই ভূমধ্যসাগর এবং লোহিত সাগরের মাঝে সংযোগ সৃষ্টিকারী একটি খাল তৈরি করা হবে, যা বয়ে যাবে মিশরের মাঝ দিয়ে। এই খাল তৈরির ফলে ইউরোপ এবং এশিয়ার মাঝে চলাচলকারী জাহাজগুলোকে আর গোটা আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে আসতে হবে না। এর ফলে বেঁচে যাবে সময় এবং বেড়ে যাবে যোগাযোগ ব্যস্ততা। বহুল আকাঙ্ক্ষিত এই খালটির নাম হবে সুয়েজ খাল।

নামও ঠিক হলো এর জন্য, 'ইজিপ্ট ব্রিঙিং লাইট টু এশিয়া'। ভেবেছিলেন, মিশরকে পুরো বিশ্বে অসাধারণ মর্যাদা এনে দেবে এই শৈল্পিক মূর্তি। নির্মাণ-সংক্রান্ত নানা জটিলতা, জনবলের অভাব এবং সেই সময়ে কলেরার মহামারী- সব মিলিয়ে খালের নির্মাণকাজ শেষ হতেই লেগে গেল পুরো ১৫ বছর।

এরপর বার্থোল্ডি যখন তার নকশা নিয়ে যান তখন বাধে আরেক বিপত্তি। তার নকশা অনুযায়ী ৬ লক্ষ মার্কিন ডলারের বাজেট দিতে মিশর কোনোভাবেই সক্ষম না। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই সেখান থেকে সরে আসতে হয় সদ্য ৩৫-এ পা দেওয়া বার্থোল্ডিকে।
মিশর ফিরিয়ে দিলেও নিয়তিতে অন্য কিছু লেখা ছিল। ১৮৭১ সালে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে এসেই তিনি ওয়াশিংটন ডিসি থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসের সর্বত্র চষে বেড়াতে শুরু করলেন তার প্রকল্পের প্রচারণার জন্য। প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে বিশিষ্ট জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে লাগলেন। কিন্তু কোথাও মিলছিল না ইতিবাচক সাড়া।
এদিকে ১৮৬৫ সালে ফরাসি রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী এডওয়ার্ড ডে ল্যাবুলে বলেন, “যদি আমেরিকার স্বাধীনতা সম্পর্কিত কোনো স্মৃতিফলক তৈরি করা হয়, তাহলে তা হওয়া উচিত আমেরিকা এবং ফ্রান্সের একটি সম্মিলিত প্রকল্প।” এই কথার জের ধরে সোজা তার কাছে চলে গেলেন বার্থোল্ডি। তিনি জানতেন, একমাত্র ল্যাবুলে উদ্যোগ নিলেই আশার আলো দেখতে পারে তার প্রকল্প।
ল্যাবুলে এক কথায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্ধভক্ত ছিলেন। দেশটিকে তিনি দেখতেন ভালো এবং উৎকৃষ্ট কিছুর উদাহরণ হিসেবে।

১৮৭৫ সালে ল্যাবুলে 'ফ্রাঙ্কো-আমেরিকান ইউনিয়ন' গঠনের মাধ্যমে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার বার্থোল্ডির হাতে তুলে দেন ভাস্কর্যের কাজ শুরু করার জন্য। বার্থোল্ডি তখন গুস্তাভে আইফেলের সাথে পরামর্শ করে এর গঠন ও আকার ঠিক করেন।
তবে এই ২ লক্ষ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার কিন্তু এত সহজে আসেনি। ফ্রাঙ্কো-আমেরিকান ইউনিয়ন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, মূর্তির ভিত গঠনের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, তা তোলা হবে মার্কিনীদের কাছ থেকেই এবং জনবল সরবরাহ করবে ফ্রান্স। কিন্তু মার্কিন নাগরিকদের থেকে আশানুরূপ সাড়া মিলছিল না। বিশেষ করে নিউ ইয়র্কের বাসিন্দাদের এ ব্যাপারে যেন কোনো আগ্রহই ছিল না।
-------------------------------------------------------------
#unitedstates, #statueofliberty

Recommended